নিজস্ব প্রতিবেদকঃ

রনজিৎ বর্মন শ্যামনগর(সাতক্ষীরা) প্রতিনিধি ঃ
হিন্দু ধর্মীয় বিধান অনুযায়ী বার মাসে তের পার্বণ করে থাকি। কোন দিন টাকার জন্য ভাবতে হয় না। কোথা থেকে সকল পূজা সম্পন্ন হয় আমি নিজে জানিনা। বড় বড় পূজা যেমন দূর্গা পূজা, বাসন্তি পূজা, কালী পূজা, স্বরস্বতি পূজা, লক্ষ্মী পূজা ,নারায়ণ পূজা,মনসা পূজা প্রায় সব পূজা করে থাকি। ঠাকুরের আর্শিবাদে বা ঠাকুরের নির্দেশে বিভিন্ন রোগী দেখে থাকি । বাংলাদেশের বিভিন্ন জেলায় নিজে যেয়ে রোগী দেখে এসেছি। আমার জানা মতে তারা ঈশ^রের কৃপায় ভাল হয়েছে। আমার ঔষধ ঠাকুরের জল ,মাটি, ঘট বিতরণ এ সব কিছু। সকল সম্প্রদায়ের মানুষের বাড়ীতে আমি যাই এবং আমার যেতে হয়। এমন সব কথা বলছিলেন সাতক্ষীরার শ্যামনগর উপজেলার বুড়িগোয়ালিনী ইউনিয়নের ভামিয়া পোড়াকাটলা গ্রামের মৃত নিতাই রপ্তানের স্ত্রী ননী বালা রপ্তান। তিনি আরও বলেন এসব কিছু আমার ঈশ^র আছে তাই সম্ভব হয়েছে। আমার কোন সম্পত্তি নাই,ব্যবসা নাই কিছু নাই যা দিয়ে এমন বড় বড় পূজা করতে পারব। তিনি বলেন পূজার আগে বেশ কয়েকটা গ্রাম ঘুরে ভিক্ষা করি যা উঠে তাই দিয়ে পূজা সম্পন্ন করি।
তার সকল পূজা অর্চ্চনা হয়ে থাকে ছোট একটা জরাজীর্ণ মন্দিরে। সেটি হল ভামিয়া রপ্তানবাড়ী সার্বজনীন মন্দির। তিনি বলেন বড় বড় পূজা অনুষ্ঠানে হাজার হাজার মানুষের সমাগম হয়। এমনকি নিকটবর্তী বিজিবি ক্যাম্প, নৌপুলিশ ক্যাম্পের সদস্যবৃন্দও কোন কোন সময় অনুষ্ঠানে চলে আসেন।
বর্তমানে তার বয়স ৭৭ বৎসর । কিন্ত চাল চলন ও চেহারায় মনে হয় বয়স আরও কম। বিধবা হয়েও তিনি সধবা অর্থাৎ হিন্দু ধর্মীয় মতে এখনও শাখা সিঁদুর পরে থাকেন। তার স্বামী ১৯৭৩ সালে একটা ছেলে ও দুইটা মেয়ে সন্তান রেখে আটুলিয়া গ্রামে এক মহানাম যজ্ঞ অনুষ্ঠানে মারা যান। এর পর একটি মেয়েও মারা যায়। এক মাত্র ছেলে গণেশ চন্দ্র রপ্তান মন্দিরের পাশে নিজ বাড়ীতে পরিবার নিয়ে বাস করেন। ননী বালা রপ্তান বলেন স্বামী মারা যাওয়ার পর তাকে ঈশ^র কতৃক এই বেশ ধারণ করার জন্য স্বপ্নে বলা হয় আর সেই থেকেই শাখা,সিঁধুর পরে আছেন। তিনি মন্দিরের মধ্যে থাকেন।
সরজমিনে দেখা যায় মন্দিরের বিভিন্ন স্থানে বিভিন্ন দেব দেবীর ছোট বড় মূর্তি রয়েছে। নিরামিষ খেয়ে থাকেন, আবার কোন সময় দুধ খেয়ে থাকেন আবার না খেয়ে থাকেন এমন সব বিভিন্ন কথা বললেন। তিনি তীর্থ স্থান ভারতের বৃন্দাবন ,মায়াপুর, নবদ্বীপ,মহারাষ্ট্র সহ অন্যান্য স্থানে ঘুরেছেন।
ননী বালা রপ্তান বলেন আমি এক জন নারী আমার মন্দিরে বার মাসে তের পার্বণ করে থাকি। কিন্ত মন্দিরটি আজও বড় করতে পারিনী সংস্কার করতে পারিনী। কোন এক সময় সামান্য কিছু অনুদান পেয়েছেন সেটা দিয়ে কিছু কাজ করেছেন বলে জানান। তাই যথাযথ কতৃপক্ষের নিকট জোর দাবী করেন ভামিয়া রপ্তানবাড়ী সার্বজনীন মন্দিরটি জরুরী ভিত্তিতে সংস্কার কার্যক্রম করার।
ছবি- শ্যামনগর ভামিয়া রপ্তানবাড়ী সার্বজনীন মন্দিরে পূজা অর্চনা করছেন ননী বালা রপ্তান।
রনজিৎ বর্মন
তাং-৪.৮.২১
Leave a Reply